
সহকারী জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সীতাকুণ্ডের তিন নারী। র্কীতিমানের মৃত্যু নেই’ কথাটির যথার্থ স্বীকৃতির নজির সৃষ্টি করেছেন তিন রত্নগর্ভা নারী। অক্লান্ত পরিশ্রম করে দারিদ্র সংসারে এনেছেন গৌরব খচিত মুকুট। ১১তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ১৪৩ জনের মধ্যে ২টি মুকুট ছিনিয়ে এনেছেন একই বাড়ির দুই মেয়ে। তারা হলেন মুরাদপুর ইউনিয়নের পূর্ব মুরাদপুর গ্রামের দোয়াজী পাড়ার জয়নাল আবদীনের মেয়ে দিলরুবা ইয়াসমিন এবং কামাল উদ্দিনের মেয়ে কাউসার পারভিন মিলি।
এদের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত দিলরুবা ইয়াসমিন লাভ করেন ২য় স্থান। শিক্ষা জীবনে প্রাথমিকে অধ্যয়ন শুরু হয় সীতাকুণ্ড দোয়াজী পাড়ায় অবস্থিত মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও দোয়াজী পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর পূনরায় মাদ্রাসা শিক্ষা নিতে অধ্যয়ন করেন যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসায়। মাদ্রাসা হতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। এ পরীক্ষায় প্রথমবার অংশ নিয়ে সারাদেশ হতে ২য় স্থান লাভ করে দিলরুবা ইয়াসমিন।
এদিকে একই বাড়ির দুই মেয়ে সহকারী চিপ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের স্থান পাওয়ায় গর্বিত এলাকাবাসী, আত্মীয়–স্বজন, শিক্ষক ও সহপাঠীরা। ছাত্রীর কীর্তিত্বে খুবই আনন্দে উৎফুল্ল মাদ্রাসার শিক্ষকরা। যুবায়দিয়া মহিলা মাদ্রাসার বিএসসির শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করেও স্কুল–কলেজের শিক্ষাকে হার মানিয়েছে ছাত্রী। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সকল পরীক্ষায় অর্জন করেছে প্রথম সারি। তখন থেকে ছাত্রীর মেধার বিকাশের লক্ষণগুলো ছিল উজ্জ্বল নক্ষত্র। এখন সমাজ উন্নয়নে সততার সহিত ভূমিকা পালন করবে এই আশা সকলের। এছাড়া কৃতিত্বের কারণে সমাজে মুখ উজ্জল হয়ে উঠেছে পরিবারের। সে সাথে মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত পিতা–মাতাও।
দিলরুবা ইয়াসমিনের পিতা দোয়াজী পাড়ার জয়নাল আবদীন বলেন, সন্তানকে সন্মানের যথাস্থানে পৌঁছাতে পেরে পূরণ হয়েছে স্বপ্ন। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলেও লেখা–পড়ায় ছিল সর্বাত্নক চেষ্টা। আর সেই চেষ্টার ফল পেয়েছি। এখন চাওয়া–পাওয়া একটাই মেয়ে সততার সাথে নিজ কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে পারে এই একমাত্র আশা–ভরসা।
অন্যদিকে উপজেলার ৮ নং সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ মরহুম এম.এ মামুন মাস্টারের নাতনী এবং চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আ. ম. ম দিলসাদের ভাতিজি তাফরিমা তাবাচ্ছুমও হয়েছেন সহকারী জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। একই উপজেলার তিন নারীর একসাথে এমন সফলতায় মা–বাবা, আত্নীয়–স্বজনের পাশাপাশি গর্বিত সীতাকুণ্ডবাসীও।
পাঠকের মতামত